সাহা,
আসলে বন্ধুত্ব যে কি এটা তোমার থেকেই জেনেছি। একসময় খুব আফসোস করতাম এই ভেবে যে, আমার ভাগ্যে নি:স্বার্থ বন্ধুত্ব নাই। তখনও হয়ত জানতাম না যে, তোমার সাথে আমার এমন একটা বন্ধুত্ব হবে যার নি:স্বার্থতা আমি নিজেই অনুভব করতে পারব।
শোন, তোমাকে খুব ভালবাসি। এই বন্ধুত্বটা সারাজীবন বেঁচে থাকুক। প্রথম দিনের কথাটা মনে পরছে। তোমার সাথে সেদিন রাজবাড়িতে দেখা যদি না হত তাহলে হয়ত আমার জীবনের খুব সুন্দর কিছু মুহুর্ত হারিয়ে ফেলতাম। মাঝে মাঝে মনে হয়, তোমার জায়গায় অন্য কেউ থাকলে বন্ধুত্বটা ঠিক এমনভাবে হতনা। তুমি যতটা মানসিক যন্ত্রনার মধ্যে দিয়ে যাও ততটা যন্ত্রনায় থাকলে হয়ত আমি আমাকে নিয়েই ব্যস্ত থাকতাম।
শোন একটা সত্যি কথা বলি। যেদিন তোমার বিবাহ হয়েছিল, সেদিন আমার একটু মন খারাপ হয়েছিল। আমি সেদিন ভেবেছিলাম হয়ত বন্ধুত্বটা এখানেই শেষ হয়ে যাবে। তোমার মনে আছে কিনা জানিনা, সে সময় আমি তোমাকে কলও কম দিতাম। আমার ধারণা ছিল, যেখানে মেয়েরা বয়ফ্রেন্ডের জন্য বেস্টফ্রেন্ডকে অবহেলা করে থাকে সেখানে বিবাহের পর তুমি যোগাযোগ রাখবে এটা অসম্ভব। অবশ্য আমার ভুল ভাঙতে বেশি সময় লেগেছিল না।ভীষণ অবাক হয়ে অবশেষে বুঝেছিলাম, তোমার জীবনে বন্ধুত্ব আর ভালবাসা ২ টারই আলাদা আলাদা মূল্যায়ন আছে। তুমি বিবাহ করলে, কিন্তু তাতে আমার বন্ধুত্ব একটুও অবহেলিত হলনা। আর সেদিনই বুঝে নিয়েছিলাম এ বন্ধুত্ব ভেঙে যাওয়া অসম্ভব।
দেবজানি শোন, আমি জানি তুমি খুবই কষ্টে থাক। আমার থেকে হাজারগুণ বেশি মানসিক কষ্টে থাকতে হয় তোমাকে। তবে একটা কথা বলি, যখন পাশে কেউ থাকবে না, তখনও হাত বাড়ালে আমাকে পাবে। আমার হাতে যদি কখনও ১ দিনের জন্যও ক্ষমতা আসে, তাহলে জেনে রেখো, আমার বেস্টফ্রেন্ডের প্রতিটা চোখের পানির হিসাব নিতে আমার একটুও ভুল হবেনা।
কোন কিছুর বিনিময়ে না। বরং এই বন্ধুত্বটা চিরসজীব থাকুক হাজার বছর। আমরা পৃথিবীতে না থাকলেও আমাদের এই বন্ধুত্বের কাহিনী লেখা হোক শতাব্দীর পর শতাব্দী। জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রে পাশে থেকো আর এভাবেই সাপোর্ট করো। মাঝে মাঝে মনে হয়, আমি তোমার বন্ধুত্বের যোগ্য কিনা। হা হা হা। মিস ইউ সুইটহার্ট।
লেখক: নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
যার উদ্দেশ্যে লেখা: সাহা
